সরেজমিনে দেখা যায়, হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে ভোর রাত থেকেই গাছিরা (খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রাহক) বের হচ্ছেন খেজুরের রস সংগ্রহ করতে। উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই এখন চলছে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ। সেই রস দিয়ে বাড়িতে বাড়িতে চলছে গুড় ও পাটালি বানানোর হিড়িক। এ অঞ্চলের গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ কেটে ‘ঠিলে’ ঝুলিয়ে রস সংগ্রহ করছেন।
এলাকাবাসী জানায়, শীতে বড়ই মধুর লাগছে প্রকৃতির দান খেজুরের রস। এ রসের চাহিদা শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও ব্যাপক। চাহিদা মেটাতে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা বিক্রির উদ্দেশে গাছিরা ভোরবেলা রওনা দিচ্ছেন শহরের দিকে। কাঁচা রসের দামসহ রসের তৈরি গুড়-পাটালির দাম বর্তমান বাজারে চড়া হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গাছিরা।
জানা যায়, রসের তৈরি গুড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬ কেজি ওজনের প্রতি ছোট ভাঁড়ের দাম ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা ও বড় ভাঁড়ের দাম ১৯শ’ থেকে ২ হাজার টাকা ও পাটালি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে।
এদিকে শীতের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে রস-গুড় সংগ্রহ করে বাড়িতে বাড়িতে চলছে পিঠা-পায়েস খাওয়ার ধুম। সংগ্রহকৃত রস পিঠা-পায়েসের পাশাপাশি গুড়-পাটালি উৎপাদন করে তা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছে গাছিরা।
তবে বিদেশে রপ্তানি হওয়ার কারণে রাজগঞ্জ অঞ্চলের বিভিন্ন্ হাট-বাজারে এবার গুড়-পাটালির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাজারে নতুন গুড়-পাটালির দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা অনেকটা হতাশ হলেও গাছিরা রয়েছেন আনন্দে। গাছিরা গুড় ও পাটালির দাম বেশি পাওয়ায় যেমন খুশি তেমন প্রতিনিয়ত এলাকার ইটভাটাগুলোতে খেজুর গাছ পোড়ানো দেখে হতাশ।
এলাকার গাছি আলী আকবর, গুড় ব্যবসায়ী ভোলা জেলার রফিকুল ও রহমত জানান, দেশের তৈরি উন্নতমানের গুড়-পাটালি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সেগুলো সরবরাহ করেন। তাদের সরবরাহকৃত গুড় ও পাটালি এখন সরাসরি বিশ্বের দুটি দেশে (মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে) রপ্তানি করা হচ্ছে।
তাদের দাবি, এ ব্যবসাকে আরও সমৃদ্ধ করতে হলে প্রতিটি এলাকায় খেজুর গাছের চাষ করার জন্য দ্রুত সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া এলাকার ইটভাটাগুলোতে খেজুরগাছ পোড়ানো বন্ধ করতে হবে।